হাইকোর্টের নির্দেশ, পুলিশি নিরাপত্তায় ঘরে ফিরলো গোটা পরিবার
পটাশপুর- সম্পত্তি বিবাদের জেরে মারধর ও বাড়িঘর ভাঙচুর লুটপাটের ঘটনায় প্রাণ বাঁচাতে বাড়ি ছাড়া হয়েছিলেন। হাইকোর্টের নির্দেশে দীর্ঘ একবছর পরে পুলিশি নিরাপত্তায় বৃহস্পতিবার বাড়ি ফিরলেন গোটা পরিবার। বাড়ি ফিরলেও এখনো সেদিনের আতঙ্ক তাড়া করে বেড়াচ্ছে চন্দ পরিবারকে। গোটা পরিস্থিতির উপর নজর রেখেছে পুলিশ।
পটাশপুরের বুড়ন গ্রামের বাসিন্দা শিবশঙ্কর চন্দ ও ভাই দু'জন নাবালক অবস্থায় বাবার মৃত্যু হয়। বাবার মৃত্যুর আগে দুই ভাইকে তার কিছু সম্পত্তি লিখে দিয়ে যায়। বাকি সম্পত্তি স্ত্রীর নামে থাকে। শিবশঙ্করের ভাই বিয়ে না করায় বৃদ্ধ মা তার নামের সম্পত্তি বড় ছেলের দুই নাতিকে রেজিস্ট্রি করে দেয় বলে দাবি। গত বছর এই জানুয়ারি মাস নাগাদ ঘটনার সূত্রপাত হয়। ছোট ভাই এই ঘটনার পিছনে দাদার চক্রান্তের অভিযোগ তুলে গ্রামে শালিশি বসায়। সেই শালিশিতে শিবশঙ্করের পরিবারকে শারীরিক নিগ্রহ সহ হেনস্থা করে। মায়ের দেওয়া সম্পত্তি ছোট ভাইকে ফিরিয়ে দেওয়ার চাপ দেওয়া হয়। পরবর্তীতে দুই ভাইয়ের মধ্যে অশান্তি চরমে ওঠে। রাতের অন্ধকারে একদল দুষ্কৃতীরা তাদের বাড়ি ঘর ভাঙচুর করে। গোটা পরিবারকে একটি ঘরে আটকে রাখা হয়েছিল বলে দাবি। সেই রাতে কোনমতে প্রাণ বাঁচাতে গ্রাম ছেড়ে সপরিবারে পালিয়ে যায়। এই ঘটনায় পটাশপুর থানায় অভিযোগ করলেও তৎকালীন পুলিশের তরফে তাদের কোন সহযোগিতা করা হয়নি বলে দাবি। বাড়ি ছাড়ার পরেই দুষ্কৃতীরা তাদের গোটা বাড়ি লুটপাট চালায়। পাওয়ার টিলার থেকে , শেলাই মেশিন এমনকি রান্নার বাসনপত্র সহ লুট করে নিয়ে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। বাড়ির সাবমার্সিবল পাম্প ভেঙে নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তা চেয়ে হাইকোর্টে মামলা করে আক্রান্ত পরিবার। হাইকোর্টের নির্দেশে বৃহস্পতিবার পটাশপুর থানার পুলিশ ঘরছাড়াদের নিরাপত্তা দিয়ে বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছেন। ঘরে ফিরলেও সেদিনের ঘটনায় কথায় এখনো তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে চন্দ পরিবারকে। গোটা বাড়ি যেন ভুতুড়ে বাড়িতে পরিণত হয়েছে। নির্বিঘ্নে বাড়িতে বসার সেই জায়গায় টুকু নেই। চারিদিকে দুষ্কৃতীদের তান্ডবের স্পষ্ট ছাপ ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে। পানীয় জল টুকু খাওয়া সাবমার্সিবল পর্যন্ত ভাঙা। নতুন করে রান্নার হাড়ি, বাসন, আসবাবপত্র চাল, ডাল কিনতে হচ্ছে। এলাকায় আইনশৃঙ্খলা নজরে রাখতে পুলিশের টহলদারি বাড়ানো হয়েছে। বাড়ি ফিরলেও আতঙ্ক এখনো তাদের তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। নতুন করে অশান্তি চাইছেনা গ্রামের লোকেরা।
ঘরে ফেরা শিবশঙ্কর চন্দ বলেন ' সম্পত্তি নিয়ে গন্ডগোলের জেরে প্রাণ বাঁচাতে আমরা বাড়ি ছাড়া হয়ে ছিলাম। মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশে পুলিশের নিরাপত্তায় বাড়ি ফিরেছি। এখনো আতঙ্ক রয়েছি'।
Comments
Post a Comment