স্কুলে জঞ্জালের স্তূপ, পঠনপাঠ তলানিতে পৌছায় স্কুলে শিক্ষকদের ঢুকতে দিলেননা অভিভাবকদের।
- Get link
- X
- Other Apps
এগরা- খাতায় কলমে স্কুলে রয়েছে প্রায় সত্তোরজন ছাত্র ছাত্রী। বাস্তবে স্কুলে আসে মাত্র আট থেকে দশজন। পড়ুয়া না আসায় শ্রেনী কক্ষে ডাঁই করা রয়েছে খড়কুটো ও জ্বালানি। চেয়ার টেবিল ও বেঞ্চ গুছিয়ে রেখে দেওয়া হয়েছে। স্কুলের পঠনপাঠনের গাফিলতি ও অব্যবস্থার প্রতিবাদে অভিযুক্ত তিন শিক্ষককে স্কুলে ঢুকতে দিলেননা অভিভাবকেরা। স্কুলের বারান্দায় বসে দিন কাটালেন শিক্ষকেরা। হাল ফেরাতে অভিভাবকদের নিয়ে স্কুলে বৈঠকে বসেন স্কুল পরিদর্শক।
এগরার জেড়থানের সাতখন্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়টি চারদশক আগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। গ্রামের ছেলে মেয়েদের শিক্ষা লাভের আশায় গ্রামের এক ব্যক্তির দান করা জমিতে এই স্কুল গড়ে উঠেছিল। এক দশক আগে পর্যন্ত স্কুলে ছাত্র ছাত্রীদের পঠনপাঠনের যথেষ্ট সুনাম ছিল। সাতখন্ড ছাড়াও আশপাশের একাধিক গ্রামের ছেলে মেয়েরা এই স্কুলে পড়াশোনা করতো। গত কয়েক বছরে স্কুলে পঠনপাঠন তলানিতে পৌছেছে। স্কুলে নামমাত্র তিনজন শিক্ষক আসেন গল্পগুজব করে আবারো বাড়ি ফিরে যান বলে দাবী। খাতায় কলমে স্কুলে সত্তোরজন ছাত্র ছাত্রী রয়েছে। শিক্ষার অধিকার আইনে তিরিশ জন ছাত্র পিছু এক জন শিক্ষক থাকবে। সেই অনুপাতে সত্তোরজন ছাত্র ছাত্রীর জন্য তিন জন শিক্ষক নিযুক্ত রয়েছেন। পঠনপাঠন তলানিতে পৌছানোয় অভিভাবকেরা তাদের সন্তানদের প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে নিয়ে বেসরকারি স্কুলে ভর্তি করেছে। বেসরকারি স্কুলে একে একে ছাত্ররা ভর্তি হলেও স্কুলের খাতায় তাদের নাম নথিভুক্ত রয়েছে। স্কুলে উপস্থিত ছাত্র ছাত্রীদের সংখ্যা কমে আট থেকে দশজন হয়েছে। এই অল্পসংখ্যক ছাত্র ছাত্রীদের জন্য স্কুলে অনিয়মিত মিডডে মিলের রান্না হতো। মাসের অর্ধেকদিন মিডডে মিল না পেয়ে বাড়ি ফিরতে হয় ছাত্র ছাত্রীদের। স্কুলের বারান্দা থেকে শ্রেনী কক্ষে কখনো ঝাড়ু পর্যন্ত দেওয়া হয়না। চারিদিকে নোংরা আবর্জনাময় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কোনমতে স্কুল চলতো। একটি শ্রেনীকক্ষে আবার জালানি ও খড়কুটো ডাঁই করে রাখা হয়েছে। এই জ্বালানি দিয়ে মাঝে মধ্যেই মিডডে মিলের রান্না হয় বলে দাবী। একাধিকবার ব্লক প্রশাসনকে জানিয়ে কোন সুরাহা হয়নি বলে দাবী। মঙ্গলবার সকালে সাড়ে দশটা নাগাদ তিন শিক্ষক স্কুলে এসেছিলেন। সেই মুহূর্তে ক্ষুব্ধ অভিভাবক থেকে গ্রামবাসীরা শিক্ষকদের স্কুলে ভিতর ঢুকতে দেননি। শুধুমাত্র জনা সাতেক ছাত্র ছাত্রীরা শ্রেনীকক্ষে বসেছিল। অভিভাবকদের বাধায় সকাল থেকে দুপুর আড়াটা পর্যন্ত তিনজন শিক্ষিকা স্কুলের বারান্দায় বসে দিন কাটিয়েছেন। বিডিওর নির্দেশে দুপুরে স্কুল হাজির হয় এগরা উত্তর চক্রের স্কুল পরিদর্শক সুব্রত দে। শিক্ষক ও অভিভাবকদের নিয়ে স্কুলে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা হয়। স্কুলের পঠনপাঠন ও পরিকাঠামো উন্নয়নে আশ্বাসের পরে এদিন ক্ষান্ত হয় গ্রামবাসীরা।
স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বলেন 'ছাত্র ছাত্রীদের উপস্থিত কমে যাওয়ায় পঠনপাঠনে একটু ঢিলেমি হয়েছিল। তবে মিডডে মিল নিয়মিত হয়। প্রশাসনের নির্দেশে মেনে কাজ করা হবে'।
এগরা-১ বিডিও দুর্গাপ্রসাদ ঘোষ বলেন ' স্কুলের অব্যবস্থা নিয়ে গ্রামবাসীরা বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন। স্কুল পরিদর্শকে পাঠিয়ে অভিভাবকদের দাবী গুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। শিক্ষকদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে'।
- Get link
- X
- Other Apps
Comments
Post a Comment