ভুয়ো আয়কর অফিসার সেজে সোনার দোকানে ডাকাতি
এগরা- ভরদুপুরে শহরে ভুয়ো পুলিশ ও আয়কর অফিসারদের পরিচয়ে সোনা সহ দোকানের মালিকে তুলে গেল দুষ্কৃতীরা। ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে ডাকাতির ঘটনায় প্রায় দেড়ঘন্টা পরে থানায় আসেন দোকানের কর্মীরা। পিছনে সোনার দোকানের বেআইনি কারবার জড়িত থাকার সন্দেহ পুলিশের। রাতে পুলিশ উলুবেড়িয়ার থেকে দুষ্কৃতীদের গাড়ি সহ তার চালককে আটক করেছে। তবে খোয়া যাওয়া সোনার এখনো কোন হদিশ পায়নি পুলিশ।
এগরা শহরে মিলনীবাজারে শচীন পেটেলদের সোনার দোকান রয়েছে। সোনার এই দোকান থানা থেকে মেরেকেটে দুশো মিটার দূরে অবস্থিত। দোকানে গহনা সোনা গলিয়ে পাকা সোনার বাট তৈরীর কারবার চলে। শুক্রবার দুপুর সাড়ে তিনটা নাগাদ ডাকাত দলের এক সদস্য ক্রেতা সেজে প্রথমে দোকানে পাকা সোনা কিনতে ঢুকেছিল। কিছু পরে একটি কালো এসইউভি গাড়িতে জলপাই পোশাকের ভুয়ো পুলিশ সহ চারজন সাদা পোশাকে ভুয়ো আয়কর অফিসার সেজে দোকানে ঢুকে পড়ে। অভিযুক্তরা কেশপুর থানার পুলিশ সহ আয়কর অফিসারের পরিচয় দেয় বলে দাবী। দোকানে বেআইনি সোনার কারবার চালানো হচ্ছে। হিসেবে বহির্ভূত সোনা রয়েছে এই বলে দুষ্কৃতীরা দোকানের কর্মীদের ধমক চমক দিতে থাকেন। ক্রেতা সেজে আসা তাদের সাকরেদকে একই ভাবে বেআইনি সোনার কারবারে যুক্ত রয়েছে এই বলে আটক করে। দোকানের সোনার গহনা সহ পাকা সোনা এবং সমস্ত কাগজপত্র ব্যাগে নিয়ে দোকান মালিককে তাদের গাড়িতে যাওয়ার নির্দেশ দেন। তখনো ভুয়ো পুলিশ ও আয়কর অফিসারদের খপ্পরে পড়েছে ভ্রুনাক্ষরে টের পায়নি দোকানী। দোকানের সমস্ত সোনা ও কাগজপত্র ব্যাগে নিয়ে দুষ্কৃতীদের কথা মতো তাদের গাড়িতে উঠে পড়ে দোকান মালিক শচীন। এখানেই পুলিশের সন্দেহ জোরালো হয়েছে। মজুত সোনা ও গয়না যদি আইনমেনে থাকে তাহলে কেন দোকান মালিক সিজার লিস্ট দিতে চাপ দেবেনা। ভুয়ো অফিসারদের সঙ্গে এই নিয়ে বাকবিতন্ডা তৈরী হতো। এখানে সেই সমস্ত কিছুই হয়নি বলে দাবী। সোনা ও গয়না সমেত দোকান মালিককে নিয়ে গাড়ি খড়গপুরের দিকে ছুটতে থাকে। পশ্চিম মেদিনীপুরের মকরামপুরের কাছে সোনা ভর্তি ব্যাগ নিয়ে দুষ্কৃতীরা দোকান মালিককে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেয়। যোগাযোগ যাতে না করতে পারেন সেই কারনে তার মোবাইল ফোন ছাড়িয়ে নেয় দুষ্কৃতীরা। ততক্ষণে টকন নড়ে বড়সড় প্রতারণার ফাঁদে পড়েছে। ঘটনায় দেড়ঘন্টা পরে প্রায় পাঁচটা নাগাদ এগরা থানায় এসে তাদের কোন পুলিশ ও আয়কর অফিসার দোকানে গিয়েছিল কিনা জানতে চায়। বিষয়টি শুনে হতবাক পুলিশ। পুলিশের তিনটি দল অভিযুক্ত গাড়ির খোঁজে বেরিয়ে যায়। রাতে দোকান মালিক এগরা থানায় দোকান চুরির অভিযোগ করেন। সেই রাতে উলুবেড়িয়ার কাছে চালক সহ পুলিশ অভিযুক্ত কালো রংয়ের এসইউভি গাড়িকে আটক করে। তবে গাড়ি থেকে কোন সোনা পাওয়া যায়নি বলে দাবী। অভিযান চালিয়ে আরো সন্দেহ ভাজন চারজকে পুলিশ আটক করেছে। যদিও ঘটনা নিয়ে মুখে কুলুপ এটেছেন দোকান মালিক শচীন পেটেল। উল্টে খবর যাতে প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ করেন।
এগরা মহকুমা পুলিশ আধিকারিক দেবীদয়াল কুন্ডু বলেন ' ভুয়ো আয়কর অফিসারের পরিচয় দিয়ে একটি সোনার দোকানে চুরির অভিযোগে পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে। চুরির ঘটনায় ব্যবহৃত গাড়ি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে'।
Comments
Post a Comment