কাদা রাস্তায় অ্যাম্বুলেন্স যায় না। টোটোয় হাসপাতালে নিয়ে আসার পথেই মৃত্যু হল মহিলার
- Get link
- X
- Other Apps
পটাশপুর- গ্রামীন সড়কের কাজ শুরুর দাবীতে দু'সপ্তাহ আগে পথ অবরোধ করেছিলেন গ্রামবাসীরা। সেই হাঁটু সমান কাদায় পথে অ্যাম্বুলেন্স যাওয়ার উপায় নেই। হৃদরোগে অসুস্থ মহিলাকে টোটোয় বসিয়ে প্রায় ছ'কিলোমিটার কাদায় ঠেলতে ঠেলতে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হল বলে অভিযোগ উঠলো। সঠিক সময়ে রোগী হাসপাতালে এলে হয়তো বাঁচানো সম্ভব হতো দাবী চিকিৎসকদের।
রাজ্য গ্রামোন্নয়ন দফতরের সাড়ে ন'কোটি টাকা অর্থ বরাদ্দে অমরপুরে দুর্গারোড থেকে তালাডিহা হনুমান মন্দির পর্যন্ত গ্রামীন সড়ক তৈরীর কাজ শুরু হয়েছিল। দুর্গারোড থেকে বাঘুইখাল বাঁধে শিয়ালদা মার্কেট পর্যন্ত ছ'কিলোমিটার রাস্তায় পীচ না কংক্রিটের ঢালাই সেই দ্বন্দ্বে কাজ শুরু হয়নি। বাকি এগারো কিলোমিটার কেলেঘাইনদী বাঁধের পাকা রাস্তা তৈরীর কাজ শেষ হয়েছে। রবিবার সকালে অমরপুরের শুকেশ্বর গ্রামের বছর আটত্রিশের বাসন্তী বেরা হঠাৎ বাড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। স্থানীয় এক গ্রামীন চিকিৎসক বাড়িতে এসে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে বেগতিক বুঝে রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া কথা বলেন। বাড়িতে ঘন্টা খানেক সময় পেরিয়ে যায়। শুকেশ্বর থেকে দুর্গারোড পর্যন্ত প্রায় ছ'কিলোমিটার রাস্তা মাটির। বৃষ্টিতে কর্দমাক্ত পথে অ্যাম্বুলেন্স দূরস্ত সাইকেলে যাওয়ার উপায় নেই। অগত্যা সাতপাঁচ না ভেবে সকাল সাড়ে নটার দিকে হাসপাতালে নিয়ে আসার জন্য রোগীকে টোটোয় তোলা হয়। কিছুটা ঢালাই রাস্তা যাওয়ার পরে কাদা পথে নামতে হয় টোটোকে। ছ'জন মিলে রোগীকে টোটোয় নিয়ে হাসপাতালে আসছিল। কাদায় টোটোর চাকা বসে যাওয়ায় ঠেলতে ঠেলতে ছ'কিলোমিটার পথ পেরেতে প্রায় ঘন্টা দেড়ের সময় কেটে যায়। কাদা পথ পেরিয়ে নৈপুর রাজ্য সড়কে টোটো উঠে। তখন রোগীর খিচুনি সহ আরো সংকটজনক হয়ে উঠে। রাজ্য সড়ক ধরে পটাশপুর গ্রামীন হাসপাতালের দিকে টোটো এগিয়ে চলে। বারোটা নাগাদ হাসপাতালে রোগী গেলে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। সঠিক সময়ে রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে এলে হয়তো বাঁচানো সম্ভব হতো বলে দাবী চিকিৎসকের। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রিয়জনকে বাঁচানোর লড়াই শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়।কাদা পথ এড়িয়ে রোগীকে বিকল্প পথে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কিছুই সময় আগে চিকিৎসা পরিষেবা পেতে পারতো। পরিকল্পনার অভাবে কাদা পথে রোগীকে নিয়ে যাওয়া ভুল ছিল পরিবারের দাবী এলাকাবাসী। রাস্তা দুর্ভোগে সময় নষ্টে না অন্য কারণে রোগীর মৃত্যু হয়েছে সেই নিয়ে ধন্দ্ব তৈরী হয়েছে।
মৃতের জা শ্যামলী বেরা বলেন ' কাদা রাস্তার জন্য রোগীকে সময়ে হাসপাতালে ভর্তি করতে পারিনি। রাস্তায় যাওয়ায় পথেই তার মৃত্যু হলো। রাস্তা মানুষের উপকারের পরিবর্তে প্রাণ কেড়ে নিলো'।
পটাশপুর-১ বিডিও বিধানচন্দ্র বিশ্বাস বলেন ' মৃত্যুর ঘটনা অন্তত্য দুঃখজনক। পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই। রাস্তা দুর্ভোগের জন্য এই মৃত্যু হয়েছে কিনা আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে বিষয়টি দেখছি'।
- Get link
- X
- Other Apps
Comments
Post a Comment