সরবতে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে স্বামীকে খুনের চাঞ্চল্য পটাশপুরে
পটাশপুর- স্ত্রীর পরকীয়ায় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন স্বামী। তৃতীয়ার দিনে প্রেমিকের দেওয়া ঘুমের ওষুধ সরবতের সঙ্গে মিশিয়ে দিয়ে স্বামীকে খাইয়ে দিয়ে খুন করলো স্ত্রী। পুলিশ অভিযুক্ত যুবতীকে গ্রেফতার করলো। খুনের অভিযোগ স্বীকার করেছে ধৃত যুবতী।
পটাশপুরে সাতসতমালের বাসিন্দা সপ্তরথী বর(৪৫) শঙ্করপুরে ট্রালারে মৎসজীবির কাজ করেন। ট্রলারে কাজ করার সুবাবে অধিকাংশ সময়ে ওই ব্যক্তি বাড়ির বাইরে থাকতেন। বাড়িতে বছর আটত্রিশের স্ত্রী নমিতা ও বৃদ্ধা মা সহ তাদের পনেরো বছরের একটি ছেলে থাকতো। নমিতা সংসার চালাতেন। স্বামীর অনুপস্থিতর সুযোগে গ্রামের এক যুবকের সঙ্গে পরকীয়ার লিপ্ত হয়ে পড়েছিলেন স্ত্রী নমিতা। এই নিয়ে পরিবারে স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে বাড়ি ফিরলে অশান্তি শুরু হতো। ছেলের অবর্তমানে অভিযুক্ত যুবক তাদের বাড়িতে আসাতো বলে দাবী। বাইরের লোক বাড়িতে আসায় বৃদ্ধা শাশুড়ি শিপুবালা বর প্রতিবাদ করলে গুনধর বৌমা বৃদ্ধার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠতেন। পুজোর উপলক্ষে প্রেমিক যুবকের কাছ থেকে পুজোর উপহার নিয়েছিলেন ওই মহিলা। মহালয়ার পরের দিন বুধবার সন্ধ্যায় ট্রারালের কাজ শেষ করে স্বামী সপ্তরথী বাড়িতে ফিরেছিলেন। যুবকের কাছ থেকে পুজোর উপহার নেওয়ার বিষয়টি জানতে পেরে স্বামী প্রতিবাদ করেন। এই নিয়ে সন্ধ্যায় দুজনের মধ্যে ঝগড়া বাঁধে। বিষয়টি প্রেমিক যুবককে জানায় অভিযুক্ত মহিলা। সেই রাতে দুজনে মিলে পথের কাঁটা সরানোর পরিকল্পনা করে। প্রেমিক যুবক বুধবার রাতে মহিলাকে হাতে একাধিক ঘুমের ওষুধ পৌঁছে দিয়ে যায়। বৃহস্পতিবার সকালে স্বামী ঘুম থেকে উঠেছিলেন। স্ত্রী পরিকল্পনা মতো সকালে পালো সরবতের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে রাখে। সেই বিষের সরবতের গ্লাস স্ত্রী স্বামীর হাতে তুলে দেয়। সরবত খেয়ে কিছু সময়ের মধ্যে ওই ব্যক্তি ঘুমিয়ে পড়েন। সন্ধ্যা হয়ে গেলেও ছেলে বিছানা থেকে না ওঠায় মা সন্দেহ হয়। প্রতিবেশীদের বাড়িতে ডেকে নিয়ে দেখেন ছেলে মৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। পুলিশ দেহ উদ্ধার করে প্রথমে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা করে তদন্ত শুরু করে। শুক্রবার সকালে মৃত ব্যক্তির মা শিপুবালা বরের বৌমার বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ করে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ শুক্রবার রাতে অভিযুক্ত স্ত্রী নমিতা বরকে গ্রেফতার করেছে। ধৃত স্ত্রী পুলিশের কাছে স্বামীকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে খুন করার অভিযোগ স্বীকার করেছে।
এগরা মহকুমা পুলিশ আধিকারিক দেবীদয়াল কুন্ডু বলেন ' স্বামীকে খুন করার অভিযোগে স্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘুমের ওষুধ কোথা থেকে এসেছিল সেই তদন্ত শুরু হয়েছে'।
Comments
Post a Comment